মানিকগঞ্জ থেকে আবু সুফিয়ান
প্রতিনিয়ত নানাভাবে দূষিত হচ্ছে আমাদের চারপাশ। এর মধ্যে শব্দ দূষণ অন্যতম।
শব্দ দূষণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবে তা শুধু রাজধানীতেই সীমাবদ্ধ নেই, বেড়েছে সারা দেশেই। রাজধানীর মানিকগঞ্জে এর প্রভাবটা বেশ লক্ষণীয়।
সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি শব্দদূষণের ফলে রাজধানীর মানিকগঞ্জে এখন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে। মানিকগঞ্জের বিশাল জনসংখ্যা সামাল দিতে প্রতিনিয়ত কর্ম ব্যস্ত থাকে যানবাহন। প্রতিনিয়ত যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় খুব স্বভাবিক ভাবেই প্রচুর শব্দ দূষণ হচ্ছে।
কয়েকজন পথচারী জানান, অসহনীয় হর্ন ব্যবহার ও বেশিরভাগ চালকদের কোনো রকম প্রশিক্ষণ বা নিবন্ধন না থাকায় অসচেতনতায় তারা প্রতিনিয়তই শব্দ দূষণ করে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি সব চালকদের নিয়ে প্রশিক্ষণ বা কর্মশালার মাধ্যমে সচেতনায় কাজ করে তবে এ দূষণ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
সরজমিনে দেখা যায়, মানিকগঞ্জ বাস স্ট্যান থেকে শুরু করে শহরের প্রবেশ মুখে কিংবা শহরের ভিতর সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি শব্দ দূষণের ফলে টেকা দায়।
বিশেষ করে শহরে প্রবেশ এর শহীদ সরণি সড়কটি চার লেন হলেও শহরের শহীদ রফিক সড়ক তুলনামূলকভাবে অনেক সরু। ইজিবাইক চলাচল করছে সড়কের ধারণক্ষমতার তিনগুণ। সড়কের ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ ইজিবাইক চলাচলের দরুন প্রতিনিয়তই যানযট সৃষ্টি হয়। যানযট বাধলেই চারপাশ থেকে তিক্ত হর্ন বাজানো শুরু হয় সব ধরনের যানবাহনের। যানবাহনের উচ্চমাত্রার হর্ন এর আওয়াজে কান ঝালাপালা হওয়ার দশা।প্রতিটি জটলায় হর্নের প্রতিযোগিতা যেন থামতে চায় না। যানবাহনে হর্নের প্রতিযোগিতায় নাজেহাল শহরে বসবাসরত প্রতিটি মানুষ।
শব্দদূষণের উৎস শুধু যানবাহন নয়। বাড়িঘর ও অন্যান্য স্থাপনার নির্মাণকাজের শব্দ, উচ্চস্বরে মাইক বাজানো, কোনো উৎসব অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে গান বাজানো—এগুলোও শব্দদূষণে ভূমিকা রাখছে।
যানজটের কারণে বেশি মাত্রায় হর্নের ব্যবহার হয় কিংবা উচ্চ গানের শব্দ ,এই অসহনীয় শব্দ ছোট-বড় সবারই কানের ক্ষতি করছে ও মস্তিষ্কে খারাপ প্রভাব ফেলছে। শব্দদূষণের কারণে শ্রবণশক্তি হ্রাসের পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্য এবং আচার-আচরণ - উভয় ক্ষেত্রেই সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে। অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত শব্দের কারণে ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক স্বাভাবিক কার্যকলাপ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। শব্দদূষণের কারণে দুশ্চিন্তা, উগ্রতা, উচ্চ রক্তচাপ, টিন্নিটাস, শ্রবণশক্তি হ্রাস, ঘুমের ব্যাঘাতসহ অন্যান্য ক্ষতিকর ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে।
তবে বাংলাদেশে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০০৬ অনুসারে, শব্দদূষণ একটি দণ্ডণীয় অপরাধ। প্রথমবার অপরাধের জন্য অনধিক একমাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ হাজার টাকার অর্থদণ্ড বা উভদণ্ড। আর পরবর্তী অপরাধের জন্য অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভদণ্ড হতে পারে।
তবে আইন থাকলেও আইনের দ্বারা সুফল না পাওয়ায় প্রতিনিয়ত নিরব ঘাতকের শিকার হয় শহরের ভেতর বসবাসরত মানুষ।
তবে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা বলছে শব্দ দূষণ রোধে সরকারের আইন রয়েছে। অথচ এর প্রতিকার না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। শব্দদূষণ একটি মারাত্মক দূষণ। তাই শব্দদূষণ রোঁধ করতে প্রশাসনের নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া ও তৎপরতা বৃদ্ধি করা অতি জরুরি।
তারা আরও বলে, ‘আইনানুযায়ী হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকার নির্ধারিত কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ মিটার পর্যন্ত নীরব এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেসব জায়গায় মাইকিং করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।’এইসব বিষয়গুলো উপর প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া অতি জরুরি।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আকাশ চৌধুরী, মোঃ আবুল বাসার, উপদেষ্টা সম্পাদক, মোঃ আব্দুল মতিন খান, প্রধান সম্পাদক,
মোঃ ইসমাইল হোসেন হৃদয়, বার্তা সম্পাদক
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©২০২৪ আকাশ বিডি নিউজ