১১:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগুন নিয়ে খেলতে গেলে হাত পুড়ে যাবে: প্রধানমন্ত্রী

  • বংশাই আইটি
  • আপডেট : ০১:৪৫:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩
  • 151

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি শুধু এইটুকু বলতে চাই, দুই-চারটা গাড়ি পুড়িয়ে সরকার ফেলে দেয়া যাবে না। নির্বাচন ঠেকানো যাবে না; বরং আগুন নিয়ে খেলতে গেলে আগুনেই হাত পুড়ে যাবে।’

বোমাবাজি ও আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগুন নিয়ে খেলতে গেলে হাত পুড়ে যাবে।

সিলেট নগরের আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে বুধবার বিকেলে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এ জনসভার মধ্য দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনি প্রচার শুরু করলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বলে নির্বাচন প্রতিহত করবে। এত সাহস তারা পায় কোথায়? লন্ডনে বসে একটা কুলাঙ্গার নির্দেশ দেয় আর এখানে জ্বালাও-পোড়াও করে মানুষ হত্যা করে।

‘আমি শুধু এইটুকু বলতে চাই, দুই-চারটা গাড়ি পুড়িয়ে সরকার ফেলে দেয়া যাবে না। নির্বাচন ঠেকানো যাবে না; বরং আগুন নিয়ে খেলতে গেলে আগুনেই হাত পুড়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমার হারানোর কিছু নেই, আমি সব হারিয়েছি। কেবল এক বোন ছাড়া আমার আর কেউ নেই। এই জনগণই আমার সব। তাই আমাকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।’

আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট চেয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘এই নৌকা নুহ নবীর নৌকা। এই নৌকা মানব জাতিকে রক্ষা করেছে। নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে; উন্নয়ন পেয়েছে। আবার আপনারা নৌকায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন। বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ সালে আমেরিকা প্রস্তাব দিয়েছিল দেশের গ্যাস বিক্রি করতে হবে। আমি রাজি হইনি। এ কারণে আমাদের ক্ষমতায় আসতে দেয়া হলো না। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এলো বিএনপি। এরপর শুরু হলো দুঃশাসন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন উন্নয়ন করছি, বিএনপি তখন আগুন দিয়ে মানুষ পোড়াচ্ছে; দেশের সম্পদ ধ্বংস করছে। ২০১৩ সালেও তারা এমনটি করেছিল।

‘২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিন হাজারের মতো মানুষ পুড়িয়েছে তারা। ২০১৮ সালে ভোটে এসে তারা নমিনেশন বাণিজ্য শুরু করল।’

গত ১৫ বছরে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘গত ১৫ বছরের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। বিএনপির আমলে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ ভাগ। এখন আমরা ১৮ ভাগে নামিয়ে এনেছি। মাথাপিছু আয় অনেক বেড়ে গেছে। এ দেশের কোনো মানুষ যেন ভূমিহীন ও গৃহহীন না থাকে, এ জন্য ৮ লক্ষ ৪১ হাজার ঘর নির্মাণ করে দিয়েছি। এখন সিলেটে কোনো গৃহহীন ও ভূমিহীন নেই।

‘৮ লক্ষ মানুষকে আমর বয়স্ক ও বিধবা ভাতা দিই। শিক্ষাবৃত্তি ও উপবৃত্তি পাচ্ছে প্রায় ৩ কোটি শিক্ষার্থী। সাক্ষরতার হার ৪৫ ভাগ থেকে ৭৫ ভাগে উন্নীত করেছি। ১ কোটি থেকে খাদ্য উৎপাদন ৯ কোটিতে উন্নীত করেছি, তবে সবাই খেয়াল রাখবেন, কোনো জমি যেন পতিত না থাকে। নিজের খাদ্য নিজেই উৎপাদন করেন।’

তিনি বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। আজকে সবার হাতেই মোবাইল ফোন। ছিয়ানব্বই সালে ক্ষমতায় এসে আমরা মোবাইল ফোন দিয়েছি। এখন গ্রামেগঞ্জেও ইন্টারনেট আছে।’

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সিলেটের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে দলটির সভাপতি বলেন, ‘সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। ওসমানী বিমানবন্দর আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। সিলেটে মেট্রোরেল চালু করা যায় কি না, সে জন্য সমীক্ষা চলছে। সুরমা নদীর খনন শুরু হয়েছে। সিলেটে যেভাবে আমরা উন্নয়ন করেছি, আমাদের প্রতিটি লক্ষ্য পূর্ণ করেছি।’

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকির আহমদ ও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খানের সঞ্চালনায় জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা বলেছিলাম। তা করেছি। এখন আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব। আবার নির্বাচিত হলে আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’

তিনি বলেন, ‘একাশি সালে দেশে ফিরে সিলেটে জনসভার মাধ্যমেই রাজনীতি শুরু করি। এরপর থেকে সবসময়ই সিলেটে আসি। এবারও সিলেট থেকে নির্বাচনি প্রচার শুরু করলাম।’

জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি এখন কোথায়? কোথায় আছে? পালিয়ে গেছে। তারা বলেছিল, ২৭ অক্টোবরের পর শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবে। এখন তারাই পালিয়ে গেছে।

‘বিএনপিকে জনগণ লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছে। বিএনপি খেলায় নাই। খেলায় আছে ১ হাজার ৮৯৬ জন। ৭ তারিখ তারা খেলবে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি ভুয়া। তাদের ধর্মঘট, হরতাল, রাজনীতি সব ভুয়া। তাদের বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র রুখতে হবে। বিএনপি নেতারা মানুষ নয়, মানুষের নামে জানোয়ার।

‘এরা থাকলে গণতন্ত্র থাকবে না, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি থাকবে না, শান্তি থাকবে না। এদের বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আগামীতে ক্ষমতায় গেলে সিলেটে শহর রক্ষা বাঁধ হবে। সিলেটে রেলওয়ের উন্নয়ন হবে।’

তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছেন। এ কারণে দেশের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। এই শান্তি ও স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে হবে। এ জন্য শেখ হাসিনা সরকার বারবার দরকার।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমার বড় ভাই আবুল মাল আবদুল মুহিত যেভাবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে গেছেন, আমিও তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে চাই। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে চাই।’

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘নৌকা জয়ী হলে মানুষ জয়ী হয়, দেশ জয়ী হয়। তাই সিলেটের মানুষ নৌকাকে জয়ী করতে কখনোই ভুল করবেন না। আর নৌকা জয়ী হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।’

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের আমলে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সুনামগঞ্জের চেহারা বদলে গেছে। নেত্রকোণার সাথে সুনামগঞ্জের রেল যোগাযোগ স্থাপন করা হবে।’

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, ‘একদল নির্বাচনকে বানচাল করতে জ্বালাও-পোড়াও করছে; মানুষ হত্যা করছে। আমরা জ্বালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি। তাই নির্বাচনে এসেছি।’

তিনি বলেন, ‘সিলেট বন্যাপ্রবণ এলাকা। তাই বন্যা মোকাবিলায় একটি বিশেষ প্রকল্প এবং পরিবেশবান্ধব উপায়ে সিলেটের কোয়ারিগুলো থেকে সীমিত আকারে পাথর উত্তোলন করতে হবে।’

জনসভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, ইনাম আহমদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল, কার্যকরী কমিটির সদস্য আজিজুস সামাদ ডন, মুশিকুর রহমান, সুজিত রায় নন্দী, সিলেট সিটি মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

এর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনি প্রচার শুরু করতে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তাকে অভ্যর্থনা জানান কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।

এরপর প্রটোকলহীন গাড়িতে করে হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার ও হযরত শাহ পরান (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তার ছোট বোন শেখ রেহানাসহ দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবারের মতো এবারও সিলেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনি প্রচার শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

২০১৮ সালের পর বুধবার আবার সিলেটের কোনো জনসভায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগ সভাপতির এ নির্বাচনি সফরের খরচ বহন করে তার দল।

মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু সনদ দিবস উদযাপন

আগুন নিয়ে খেলতে গেলে হাত পুড়ে যাবে: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট : ০১:৪৫:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি শুধু এইটুকু বলতে চাই, দুই-চারটা গাড়ি পুড়িয়ে সরকার ফেলে দেয়া যাবে না। নির্বাচন ঠেকানো যাবে না; বরং আগুন নিয়ে খেলতে গেলে আগুনেই হাত পুড়ে যাবে।’

বোমাবাজি ও আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগুন নিয়ে খেলতে গেলে হাত পুড়ে যাবে।

সিলেট নগরের আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে বুধবার বিকেলে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এ জনসভার মধ্য দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনি প্রচার শুরু করলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বলে নির্বাচন প্রতিহত করবে। এত সাহস তারা পায় কোথায়? লন্ডনে বসে একটা কুলাঙ্গার নির্দেশ দেয় আর এখানে জ্বালাও-পোড়াও করে মানুষ হত্যা করে।

‘আমি শুধু এইটুকু বলতে চাই, দুই-চারটা গাড়ি পুড়িয়ে সরকার ফেলে দেয়া যাবে না। নির্বাচন ঠেকানো যাবে না; বরং আগুন নিয়ে খেলতে গেলে আগুনেই হাত পুড়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমার হারানোর কিছু নেই, আমি সব হারিয়েছি। কেবল এক বোন ছাড়া আমার আর কেউ নেই। এই জনগণই আমার সব। তাই আমাকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।’

আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট চেয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘এই নৌকা নুহ নবীর নৌকা। এই নৌকা মানব জাতিকে রক্ষা করেছে। নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে; উন্নয়ন পেয়েছে। আবার আপনারা নৌকায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন। বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ সালে আমেরিকা প্রস্তাব দিয়েছিল দেশের গ্যাস বিক্রি করতে হবে। আমি রাজি হইনি। এ কারণে আমাদের ক্ষমতায় আসতে দেয়া হলো না। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এলো বিএনপি। এরপর শুরু হলো দুঃশাসন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন উন্নয়ন করছি, বিএনপি তখন আগুন দিয়ে মানুষ পোড়াচ্ছে; দেশের সম্পদ ধ্বংস করছে। ২০১৩ সালেও তারা এমনটি করেছিল।

‘২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিন হাজারের মতো মানুষ পুড়িয়েছে তারা। ২০১৮ সালে ভোটে এসে তারা নমিনেশন বাণিজ্য শুরু করল।’

গত ১৫ বছরে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘গত ১৫ বছরের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। বিএনপির আমলে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ ভাগ। এখন আমরা ১৮ ভাগে নামিয়ে এনেছি। মাথাপিছু আয় অনেক বেড়ে গেছে। এ দেশের কোনো মানুষ যেন ভূমিহীন ও গৃহহীন না থাকে, এ জন্য ৮ লক্ষ ৪১ হাজার ঘর নির্মাণ করে দিয়েছি। এখন সিলেটে কোনো গৃহহীন ও ভূমিহীন নেই।

‘৮ লক্ষ মানুষকে আমর বয়স্ক ও বিধবা ভাতা দিই। শিক্ষাবৃত্তি ও উপবৃত্তি পাচ্ছে প্রায় ৩ কোটি শিক্ষার্থী। সাক্ষরতার হার ৪৫ ভাগ থেকে ৭৫ ভাগে উন্নীত করেছি। ১ কোটি থেকে খাদ্য উৎপাদন ৯ কোটিতে উন্নীত করেছি, তবে সবাই খেয়াল রাখবেন, কোনো জমি যেন পতিত না থাকে। নিজের খাদ্য নিজেই উৎপাদন করেন।’

তিনি বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। আজকে সবার হাতেই মোবাইল ফোন। ছিয়ানব্বই সালে ক্ষমতায় এসে আমরা মোবাইল ফোন দিয়েছি। এখন গ্রামেগঞ্জেও ইন্টারনেট আছে।’

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সিলেটের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে দলটির সভাপতি বলেন, ‘সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। ওসমানী বিমানবন্দর আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। সিলেটে মেট্রোরেল চালু করা যায় কি না, সে জন্য সমীক্ষা চলছে। সুরমা নদীর খনন শুরু হয়েছে। সিলেটে যেভাবে আমরা উন্নয়ন করেছি, আমাদের প্রতিটি লক্ষ্য পূর্ণ করেছি।’

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকির আহমদ ও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খানের সঞ্চালনায় জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা বলেছিলাম। তা করেছি। এখন আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব। আবার নির্বাচিত হলে আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’

তিনি বলেন, ‘একাশি সালে দেশে ফিরে সিলেটে জনসভার মাধ্যমেই রাজনীতি শুরু করি। এরপর থেকে সবসময়ই সিলেটে আসি। এবারও সিলেট থেকে নির্বাচনি প্রচার শুরু করলাম।’

জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি এখন কোথায়? কোথায় আছে? পালিয়ে গেছে। তারা বলেছিল, ২৭ অক্টোবরের পর শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবে। এখন তারাই পালিয়ে গেছে।

‘বিএনপিকে জনগণ লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছে। বিএনপি খেলায় নাই। খেলায় আছে ১ হাজার ৮৯৬ জন। ৭ তারিখ তারা খেলবে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি ভুয়া। তাদের ধর্মঘট, হরতাল, রাজনীতি সব ভুয়া। তাদের বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র রুখতে হবে। বিএনপি নেতারা মানুষ নয়, মানুষের নামে জানোয়ার।

‘এরা থাকলে গণতন্ত্র থাকবে না, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি থাকবে না, শান্তি থাকবে না। এদের বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আগামীতে ক্ষমতায় গেলে সিলেটে শহর রক্ষা বাঁধ হবে। সিলেটে রেলওয়ের উন্নয়ন হবে।’

তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছেন। এ কারণে দেশের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। এই শান্তি ও স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে হবে। এ জন্য শেখ হাসিনা সরকার বারবার দরকার।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমার বড় ভাই আবুল মাল আবদুল মুহিত যেভাবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে গেছেন, আমিও তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে চাই। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে চাই।’

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘নৌকা জয়ী হলে মানুষ জয়ী হয়, দেশ জয়ী হয়। তাই সিলেটের মানুষ নৌকাকে জয়ী করতে কখনোই ভুল করবেন না। আর নৌকা জয়ী হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।’

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের আমলে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সুনামগঞ্জের চেহারা বদলে গেছে। নেত্রকোণার সাথে সুনামগঞ্জের রেল যোগাযোগ স্থাপন করা হবে।’

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, ‘একদল নির্বাচনকে বানচাল করতে জ্বালাও-পোড়াও করছে; মানুষ হত্যা করছে। আমরা জ্বালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি। তাই নির্বাচনে এসেছি।’

তিনি বলেন, ‘সিলেট বন্যাপ্রবণ এলাকা। তাই বন্যা মোকাবিলায় একটি বিশেষ প্রকল্প এবং পরিবেশবান্ধব উপায়ে সিলেটের কোয়ারিগুলো থেকে সীমিত আকারে পাথর উত্তোলন করতে হবে।’

জনসভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, ইনাম আহমদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল, কার্যকরী কমিটির সদস্য আজিজুস সামাদ ডন, মুশিকুর রহমান, সুজিত রায় নন্দী, সিলেট সিটি মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

এর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনি প্রচার শুরু করতে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তাকে অভ্যর্থনা জানান কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।

এরপর প্রটোকলহীন গাড়িতে করে হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার ও হযরত শাহ পরান (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তার ছোট বোন শেখ রেহানাসহ দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবারের মতো এবারও সিলেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনি প্রচার শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

২০১৮ সালের পর বুধবার আবার সিলেটের কোনো জনসভায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগ সভাপতির এ নির্বাচনি সফরের খরচ বহন করে তার দল।