আকাশ বিডি নিউজ
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত নার্সিং সুপারভাইজার স্বপ্না সিকদার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, ডেলিভারি রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় ও রোগীদের সাথে খারাপ আচরণ,সিট কেটে দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে লিখিত অভিযোগ । এছাড়া অভিযোগ রয়েছে তিনি হাসপাতালে না করে অর্থের লোভে বাহিরে ডেলিভারি করতে বেশি ব্যাস্ত থাকে ।
জানাগেছে -গত ১২ আগষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পিএইচ ও ডাঃ শাহ আলম সিদ্দিকীর কাছে অভিযোগ করেছে মিনতি বেগম ও তোফাজ্জল হোসেন।
এসময় রোগীর স্বজনরা জানান-
উপজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র নার্স স্বপ্না শিকদার দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর যাবত একই কর্মস্থল দৌলতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মরত রয়েছে প্রথমে কিছু দিন ভালো গেলেও গত ১৫ বছর যাবত হাসপাতালে তিনি রোগীদের জিম্মি করে একের পর এক মানুষের সাথে খারাপ আচরণ, অনিয়ম, দুর্নীতি ও ডেলিভারি রোগীদের কাছ থেকে ৫-৬ হাজার টাকা নেওয়া সহ বিভিন্ন অভিযোগ তার নামে রয়েছে। এছাড়া জানা যায় একটা রোগীও টাকা ছেড়ে যেতে পারেনা।এভাবে তিনি প্রতি মাসে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে রোগীদের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে তাঁরা নিজেদের আওয়ামী পরিবারের সদস্য হিসেবে দাবী করেন।
এবিষয়ে অভিযোগ কারী মিনুতি বেগম বলেন -আমার মেয়ে সাথী আক্তার বাড়ীতেই ডেলিভারি করানো হয় । আমার মেয়ের সঠিক সময় ফুল না পরায় দৌলতপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্স স্বপ্ন শিকদার আমার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নেয় । আমি অনেক কাকুতি নিবন্ধটি করলেও আমার কাছ থেকে টাকা কম নেয়নি।আমি গরিব মানুষ অনেক বার রিকুষ্ট করার পরও টাকা কম নেয়নি বরং আমার সাথে এবং আমার রোগীর সাথে খারাপ আচরণ করেছে।আমি এর সুষ্ঠু বিচার প্রার্থনা করছি কর্তৃপক্ষের কাছে।
অভিযোগকারী তোফাজ্জল হোসেন বলেন-আমার স্ত্রী শাহনাজ আখতার সাথী কে নিয়ে ডেলিভারি করানোর জন্য দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে আসি নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত নার্স স্বপ্না শিকদার আমার স্ত্রীকে দেখে বলে যে ডেলিভারি করাতে ৭ হাজার টাকা লাগবে আমি আমি বলি যে সরকারি হাসপাতালে ডেলিভারি করাতে টাকা লাগবে কেন তার জবাবে উনি বলে মানিকগঞ্জ গেলে ২০ হাজার টাকা লাগবে আমাকে দিবেন না কেন । পরবর্তীতে সে আমার কাছ ৫ হাজার টাকা নিবে বলে ৩ হাজার টাকা দেই ডেলিভারি করানোর পর ২ হাজার টাকা দিতে দেরি হওয়ায় আমার সাথে এবং আমার স্ত্রীর সাথে দুর্ব্যবহার করে পরবর্তীতে আমি ২০০০ টাকা পরিশোধ করলে সাথে সাথে আমার রোগীকে সিট কেটে বাড়িতে যেতে বলে এদিকে আমার ওয়াইফ অসুস্থ এবং বাচ্চা অসুস্থ পরবর্তীতে আমি মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। ওখানে গিয়ে সাত দিন থাকার পর চিকিৎসা করানোর পর সুস্থ করে বাড়িতে নিয়ে আসি। সরকারি হাসপাতালে দুর্ব্যবহার এটা মেনে নেয়া যায়না।আমি এর সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে আমি কর্তৃপক্ষের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।
এদিকে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এই চক্রের সাথে নার্স আফরোজা বানু, রেহেনা আক্তার ও রোকসানা আক্তারের যোগসাজশ রয়েছে। নার্স স্বপ্না শিকদার এভাবে রোগীদের চাপ সৃষ্টি করে
অবৈধ উপার্জন করে দৌলতপুর গ্রামে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার জমি কিনে ১ কোটি টাকা ব্যয়ে ভি আই পি দ্বিতীয় তলা বিশিষ্ট বিল্ডিং নির্মাণ করেছেন।সেই বিল্ডিং ভাড়া দিয়ে তিনি সরকারি কোয়াটারে থাকেন। এত টাকার উৎস্য কোথায় জনেমতে প্রশ্ন উঠেছে।
অভিযোগের বিষয়ে হাসপাতালের নার্সিং সুপার ভাইজার স্বপ্না শিকদারের সাথে কথা বললে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন ও নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প:প: কর্মকর্তা ডাঃ শাহ আলম সিদ্দিকী বলেন আমি গত ১২ আগষ্ট লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগের কারণে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে দিয়েছি এরা তদন্ত প্রতিবেদন করে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে জমা দেয়ার কথা থাকলেও তদন্ত কাজ শেষ করতে পারিনি আরোও কিছু দিন লাগবে বলেছেন।এর মধ্যে তদন্ত কমিটির সভাপতি গাইনী কনসালট্যান্ট ডাঃ নিলুফার ইয়াসমিন, সদস্য সচিব আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ ফেরদৌস মাহমুদ ও সদস্য মেডিকেল অফিসার ডাঃ মৌসুমী ভৌমিক কে। তদন্ত প্রতিবেদনে দোষী হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।